Saturday, May 11, 2013

শাহবাগীরা অবস্থান করলে সরকার তাদের জামাই আদর করেন, আর আমাদের উপর সর্বশক্তি নিয়ে জাপিয়ে পড়েন

৫ই মে আমরা যখন আমাদের ধর্মীয় অধিকার বাস্তবায়নে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে বসে পরিছিলাম সরাকার তার সর্বাত্নক ক্ষমতা দিয়ে আমাদের উপর নির্বিচারে গুলি করেছে। এতে আমাদের অন্তত ৩০০০ নেতা কর্মী ও সমার্থক শহীদ হয়েছেন আর অসংখ্য গুলিবিদ্ধ হয়ে বিভন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা ধীন রয়েছে। এত কিছুর পরেও বুধবার ৮ই মে শাহবাগীরা আবার আবার শাহবাগে ২৪ ঘন্টা অবস্থান করে কিন্তু সরকার তাদের কোনো বাধা দেয়নি বরং পুলিশি পাহাড়ায়, সরকারি ব্যবস্থাপনায়, সরকারি লোকদের খানাপিনায়, খাবার-পানি-টয়লেট ব্যবস্থাপনায়, সরকারের আর্থিকসহ সর্বাত্মক সহযোগিতায় শাহবাগে তারা বেশ ভালো ছিলেন এবং মাঝে মধ্যে এখনও আছেন। এক কথায় সরকার শাহবাগীদের শাহবাগে জামাই আদরে রাখছেন।

উল্লেখ্য ৫ই মে'র সেই কাল রাত্রে সরকার শাহবাগের কথিত গনজাগারন মঞ্চ ভেঙ্গে দিয়েছিলেন।

৫ই মে শাপলা চত্তরে গন হত্যার পর উলটো সরকার আমাদের অসংখ্য নেতা কর্মীর নামে মামলা দিয়েছেন। আমাদের অন্যতম প্রান প্রিয় নেতা মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীকে গ্রেফতার করে ৯ দিনের রিমান্ডে নিয়েছেন। আবার শীর্ষ আলেমদেরও খুজছে সরকার। যাদের বিরুদ্ধে আমরা মাঠে নেমেছি সরকার সেই নাস্তিকদের মদদ দিয়ে আমাদের হাজার হাজার নিরিস্ত্র, ইবাদতে মগ্ন এবং ঘুমান্ত আলেমদের বুকে গুলি চালায়। মনে রাখবেন, আমাদের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি। আমরা আবার আসবো রাজপথে বাংলাদেশে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে। আপনারা আমাদের ৩ হাজারের মত নেতা কর্মীকে শহীদ করেছেন। আর কয়েক হাজারকে গুলিবিদ্ধ করেছেন এই তো, মনে রাখবেন কোটি কোটি বাংলাদেশি ধর্মপ্রান মুসলমান তাদের ধর্ম রক্ষায় শহীদ হতে প্রস্তত।

তথা কথিত শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের প্রতিটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান তথাকথিত গনজাগরণের লোকজনকে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়েছে। যেখানে আমাদেরকে(হফাজতে ইসলাম) বা বিরোধী দল অথবা কোনো রাজনৈতিক সংগঠনকে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মিছিল-সমাবেশ তো দূরের কথা রাজপথে দাঁড়াতেই দেয় না, সেখানে তথাকথিত শাহবাগিরা দিনের পর দিন শাহবাগের ব্যস্ততম সড়ক বন্ধ রেখে মিছিল সমাবেশ করেছে। প্রধান সড়ক আটকে কর্মসূচি পালনে যেখানে পুলিশের বাধা দেয়ার কথা, সেখানে তাদের দেয়া হয়েছে ভিআইপিদের মতো নিরাপত্তা। শাহবাগিদের অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য মঞ্চ ও আশপাশে পুলিশ কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়েছে। এর প্রবেশপথগুলোতে আবার বসানো হয় বেশ কয়েকটি আর্চওয়ে। শাহবাগিদের ‘সেবা’ দেয়ার জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সেখানে অস্থায়ী অফিসও খোলা হয়। সেখানে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা দিনরাত অবস্থান করে সেবা দিয়ে গেছেন। স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানককে ডিসিসির অস্থায়ী কার্যালয়ে অবস্থান করে শাহবাগিদের চাওয়া-পাওয়া মেটাতে দেখা গেছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে খাবার পানি সরবরাহসহ শাহবাগিদের জন্য মোবাইল টয়লেট সরবরাহ করা হয়। শাহবাগিদের জন্য অবৈধভাবে বিদ্যুত্সংযোগ দেয়া হয়েছে। দেশে ভয়াবহ বিদ্যুত্ঘাটতির মধ্যেও শাহবাগিদের জন্য হাজার ভোল্টের একাধিক ফ্লাডলাইট জ্বালিয়ে দেয়া হয়। তথাকথিত শাহবাগিদের ঘোষণায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ‘অনেকটা’ সরকারিভাবেই পালিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রী-এমপি, প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

শাহবাগিদের আন্দোলনের পক্ষে জাতীয় সংসদে সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সব মন্ত্রী-এমপি তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। কিন্তু ৯২% মুসলমানের দেশে ইমান রক্ষার আন্দোলনে সরকার এভাবে প্রতক্ষ ভাবে বিপরিত মুখি অবস্থান নিয়ে ভাল করেননি। সামান্য কয়জন বাম ও নাস্তিক নিয়ে সরকার বেশি দূর আগাতে পারবেনা।


গতকাল মতিঝিলে শহীদদের স্মরনে হাটহাজারিতে এক বিশেষ মুনাজাত অনুষ্টান সম্পন্ন হয়। এ দোয়া অনুষ্টান পরিচালনা করেন আমাদের প্রান প্রিয় আমির আল্লামা শাহ আহমদ শাফি হজুর। তিনি মোনাজেতে জালেমদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন। তিনি মোনাজাতে বলেন হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী, আমাদের ওপর কত ভয়াবহ অত্যাচার-জুলুম চালানো হয়েছে। হাজার হাজার নিরীহ আলেম-ওলামাকে শহীদ করা হয়েছে। হাজার হাজার তৌহিদি জনতাকে শহীদ করা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে হতাহত করা হয়েছে। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ শত শত ওলামায়ে কেরামকে গ্রেফতার করে অত্যাচার করা হচ্ছে। হে আল্লাহ আপনার দরবারে আমরা হাজার হাজার মজলুম আলেম ও তৌহিদি জনতা ফরিয়াদ জানাচ্ছি, গায়েবিভাবে এই ভয়াবহ জুলুম-অত্যাচারের প্রতিশোধ নিন। যারা এই জুলুমে অংশ নিয়েছে, সেইসব জালেমকে নিশ্চিহ্ন করুন। এই জাতিকে এই দেশকে জুলুম-অত্যচার ও নিপীড়নের হাত থেকে রক্ষা করুন।’ আমারা সবাই বলি আমীন।

No comments:

Post a Comment

ঘোষনাঃ ৫ই মে' এর যে কোন দৃশ্য আপনার মোবাইল ফোন বা ক্যামেরায় ধারন করা কোন ছবি বা ভিডিও যদি থাকে তা নিজ দ্বায়িত্বে অনলাইন এ্যাক্টিভিটিস নেটওয়ার্কের কাছে প্রেরন করুন অথবা আমাদের ইমেইল করুন-
hifazatheislam@gmail.com
আপনার পাঠানো যে কোন তথ্য করতে পারে সত্যকে প্রস্ফুটিত।


 
হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা আন্দোলন নিয়ে সরকার জনগণের সাথে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। ধোকা দেয়ার চেষ্টা করছে। সরকারের মনে রাখা উচিত, ধোকাবাজি করে পার পাওয়া যাবে না
---
মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক
বাংলাদেশের নাস্তিকরা ফেরাউন নমরুদের চেয়েও জঘন্য
---
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, মুফাসসীরে কোরআন মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী