আজ বিকেলে ঢাকা রওয়ানা হওয়ার আগে আল্লামা শাহ আহমদ শাফি হুজুর সকলকে চিড়া-মুড়ি শুকনো খাবার জায়নামাজ তসবিহ নিয়ে অবরোধে শরিক হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন- গত ৬ এপ্রিল ঢাকায় লংমার্চ ও মহাসমাবেশে লাখ লাখ জনতার অংশগ্রহণ ছাড়াও গত এক মাসে দেশব্যাপী অর্ধশতাধিক শানে রিসালাত সম্মেলনে ব্যাপক জনসমাগমের মাধ্যমে আমরা সরকারের কাছে এই বার্তা পৌঁছিয়েছি যে, আমাদের এই ১৩ দফা দাবি এদেশের গণমানুষের দাবি। কিন্তু সরকার কোটি কোটি তৌহিদি জনতার এই দাবি পূরণে ন্যূনতম পদক্ষেপ তো নেয়ইনি, বরং সরকারের কোনো কোনো মন্ত্রী-এমপির কাছ থেকে উসকানিমূলক বক্তব্যও দেয়া হচ্ছে, যা নিতান্তই দুর্ভাগ্যজনক। এই ঈমানি দাবি আদায়ের জন্য ৯৩ বছর বয়সে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে আমাকে রাজপথে বের হতে হচ্ছে। আপনারা সবাই শান্তিপূর্ণ এই ঈমানি আন্দোলনে শরিক হবেন বলে আমি আশাবাদী।
গত ৩ মাস ধরেই বক্তৃতা-বিবৃতি, সাংবাদ সম্মেলন, জনসমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের কাছে আমাদের ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেছি। আমাদের প্রধান দাবি হচ্ছে, সংবিধানে আল্লাহর উপর পূর্ণআস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন এবং দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুরক্ষা ও শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর আইন পাস। পাশাপাশি ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন ব্লগ ও সাইটে মহান আল্লাহ, রাসুল (সা.), ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেসব অবমাননাকর জঘন্য কটূক্তিকর প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে, সেসব বন্ধ করে বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে জড়িত ব্লগ, ব্লগার ও পোস্টদাতাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা। পাঠ্যবইয়ের সব ধর্ম অবমাননাকর মন্তব্য ও উদ্ধৃতির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে অবিলম্বে সংশোধনী প্রকাশ। নারীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও সার্বিক নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। এছাড়া সব ধরনের অনাচার, ব্যভিচার ও অশ্লীলতাসহ নাটক-সিনেমায় ব্যক্তিজীবনে ধর্মীয় নিদর্শন তথা দাড়ি-টুপি, হিজাব ও ধর্মীয় শিক্ষা নিয়ে অবমাননা রোধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দান। শিক্ষার সব স্তরে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা ইত্যাদি। আমাদের সব দাবিই দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত জরুরি। সরকার দেশ, জনগণ ও মুসলমানদের স্বার্থে আমাদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নিলেই চলমান আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যায়।
এছাড়া সাভারের দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গার্মেন্ট শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বলেন, হতাহত ও চরম দুর্ভোগের শিকার মেহনতি মানুষের ন্যায্য অধিকার পূরণে গাফিলতি করবেন না। গার্মেন্টকর্মীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও ন্যায্য বেতন-ভাতার দাবিও আমরা ১৩ দফায় অন্তর্ভুক্ত করেছি। ইসলামে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকারের দিকটা অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। দুঃখ প্রকাশ করে আল্লামা শাফি হুজুর বলেন, সরকার ওলামা-মাশায়েখসহ সাধারণ মুসলমানদের ধর্মীয় দাবির প্রতি যেমন কর্ণপাত করছে না, তেমনি খেটে খাওয়া গরিব মানুষের স্বার্থ নিয়েও মোটেই ভাবছে না। ক্ষতিগ্রস্ত গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত তহবিল গঠনের কথা উল্লেখ করেন।
পরিশেষ তিনি অবরোধ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সকলকে চিড়া-মুড়ি, শুকনো খাবার, জায়নামাজ ও তসবিহ নিয়ে অবরোধ কর্মসূচিতে শরিক হতে আহ্বান জানিয়েছেন। এবং কর্মী-সমর্থক ও তৌহিদি জনতাকে কোনরূপ বিশৃঙ্খলায় না জড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনেরও তাগিদ দিয়েছেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
ঘোষনাঃ ৫ই মে' এর যে কোন দৃশ্য আপনার মোবাইল ফোন বা ক্যামেরায় ধারন করা কোন ছবি বা ভিডিও যদি থাকে তা নিজ দ্বায়িত্বে অনলাইন এ্যাক্টিভিটিস নেটওয়ার্কের কাছে প্রেরন করুন অথবা আমাদের ইমেইল করুন-
hifazatheislam@gmail.com
আপনার পাঠানো যে কোন তথ্য করতে পারে সত্যকে প্রস্ফুটিত।
hifazatheislam@gmail.com
আপনার পাঠানো যে কোন তথ্য করতে পারে সত্যকে প্রস্ফুটিত।
No comments:
Post a Comment